ঢাকা

তাওয়াফের নির্দিষ্ট কোনো সময় আছে কি?

তাওয়াফের  সময় তাওয়াফের সময়
-

হজ ও ওমরার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কাবাঘরের তাওয়াফ। এটি একটি ওয়াজিব আমল হলেও, এর বাইরেও নফল তাওয়াফ করা যায়। কোরআন ও হাদিসে তাওয়াফের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তারপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং তাদের মানত পূর্ণ করে ও তাওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের।”— (সূরা হজ, আয়াত: ২৯)

আরেক স্থানে আল্লাহ বলেন, “আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।”— (সূরা বাকারা, আয়াত: ১২৫)

তাওয়াফের ফজিলত প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামাজ আদায়ের অনুরূপ। তবে তাওয়াফকালে কথা বলা জায়েজ। তাই যে ব্যক্তি তাওয়াফের সময় কথা বলবে, সে যেন ভালো কথা বলে।”— (তিরমিজি, হাদিস: ৯৬০; ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত)

একাধিক হাদিসে তাওয়াফের মাধ্যমে পাওয়া সাওয়াব সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা রয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত,
“আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করল এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করল, তা একটি দাসকে মুক্ত করার সমতুল্য।’”— (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৯৫৬)

শরিয়ত অনুযায়ী, তাওয়াফ করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নির্ধারিত নেই। মুসল্লি যেকোনো সময়, দিন বা রাতে তাওয়াফ করতে পারেন। তবে কিছু সময় রয়েছে যা ‘মাকরূহ’ হিসেবে বিবেচিত — যেমন, সূর্যোদয়, সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় বা ফজরের পর থেকে সূর্য উঠা পর্যন্ত। এই সময়ে যদি কেউ তাওয়াফ করে, তবে এর পরবর্তী দুই রাকাত নামাজ মাকরূহ সময় শেষ হওয়ার পর আদায় করা উত্তম।

এ বিষয়ে একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে: “মিছওয়ার ইবনে মাখরামা (রা.) ফজরের পর একত্রে তিনবার তাওয়াফ করতেন এবং সূর্যোদয়ের পর প্রত্যেক তাওয়াফের জন্য দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন।”— (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ১৩৪২২)

তাওয়াফ শুধু হজ ও ওমরার অংশ হিসেবেই নয়, বরং ইবাদতের বিশেষ একটি রূপ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল শারীরিক আমল নয়, বরং আত্মিক শুদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তাই সুযোগ পেলে তাওয়াফের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির পথে অগ্রসর হওয়া একজন মুসলমানের জন্য এক অনন্য সুযোগ।




কমেন্ট বক্স