ঢাকা

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির সাবেক নেতা জিয়াউল হাসান স্বপন

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী জিয়াউল হাসান স্বপন । গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী জিয়াউল হাসান স্বপন ।
-
গাজীপুরের টঙ্গীতে চাঁদাবাজির মামলায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইনজীবী জিয়াউল হাসান স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁ থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতিরও সদস্য।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, জিয়াউল হাসান স্বপন ওই রেস্তোরাঁয় অবস্থান করছিলেন—এমন খবরে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির চারটি মামলা রয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বপন নিজেকে বিএনপির সাবেক নেতা পরিচয় দিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক এবং সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করতেন। ঢাকার বাড্ডা থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় (মামলা নম্বর ৩৩৬) তার নামও রয়েছে।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্র বলছে, জিয়াউল হাসান স্বপন এক সময় টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন এবং এখনো নামের সঙ্গে সেই পরিচয় ব্যবহার করেন। যদিও বর্তমানে তার কোনো দলীয় পদ নেই। তিনি টঙ্গীর লেদুমোল্লা রোড এলাকার কফিল উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে।

বলা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময় স্বপন টঙ্গীর কিছু আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে নানা সুবিধা আদায় করতেন। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতনের পরও তিনি ‘বিএনপি নেতা’ পরিচয়ে চাঁদাবাজিতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চাঁদা না দিলে স্বপন মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। অনেক সময় মোবাইল ফোন, ব্যবসায় অংশীদারিত্বসহ বিভিন্ন দাবি করেন। এমনকি কটূক্তি ও গালাগালের কথোপকথনের বেশ কিছু অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, স্বপনের কার্যক্রম দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে। তার নামে একাধিক মামলা ও লিখিত অভিযোগ টঙ্গী পূর্ব থানায় জমা হয়েছে। আইন পেশাকে সামনে রেখে তিনি ‘মামলা বাণিজ্য’ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

টঙ্গীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও বিএনপি কর্মীরা বলেন, সরকারের পরিবর্তনের পরও স্বপনের মতো কিছু ব্যক্তি দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। এসব কর্মকাণ্ড দলের ভিতরে অসন্তোষ ও জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।



কমেন্ট বক্স