এশিয়া কাপ মানেই ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথকে ঘিরে বাড়তি আগ্রহ। মাঠের বাইরে শুরু হওয়া সেই উত্তাপ এবার মাঠে নেমে এসেছে দ্বিগুণ উন্মাদনা নিয়ে। টস-ঝামেলা, হ্যান্ডশেক বিতর্ক, ম্যাচ রেফারিকে ঘিরে অভিযোগ—সব মিলিয়ে আজ রাতেই দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারত তিন ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার ফোরে জায়গা করে নেয়। পথে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় সূর্যকুমার যাদবের দল। অন্যদিকে, দুটি জয় নিয়ে রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয় সালমান আলী আগার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান। ফলে রবিন লিগের কারণে আবারও ক্রিকেটপ্রেমীরা পাচ্ছেন আরেকটি ভারত-পাকিস্তান মহারণের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ।

এই ম্যাচের বাড়তি আলোচনায় আছেন প্রথম ম্যাচের টস-বিতর্কের রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট, যিনি ফের দায়িত্ব পালন করবেন। ফলে ম্যাচের আগেই উত্তেজনার পারদ চড়েছে আরও কয়েকগুণ।

মাঠের পারফরম্যান্সে ভারত এগিয়ে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—সব বিভাগেই তারা দারুণ ছন্দে আছে। সংবাদ সম্মেলনে সূর্যকুমার বললেন, “আমি যখন মাঠে যাই তখন মনে হয় পুরো গ্যালারি ভর্তি দর্শকরা এসেছে বিনোদন নিতে। আমরা চাই সবাইকে মানসম্পন্ন ক্রিকেট উপহার দিতে।”

পাকিস্তানের বড় সমস্যা তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। তরুণ ও অনভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা ধারাবাহিক নন। দলের ভরসা হয়ে আছেন অভিজ্ঞ ফখর জামান ও শাহিন আফ্রিদি। ভারতের বিপক্ষে প্রতিশোধের লড়াই জিততে হলে ব্যাটিংয়ে জ্বলে উঠতে হবে সালমানের দলকে। অধিনায়ক অবশ্য আত্মবিশ্বাসী, “আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। যদি সাম্প্রতিক মাসগুলোর মতো ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, জয় সম্ভব।”

রেকর্ডে ভারত অনেকটাই এগিয়ে। দুই দল এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ১৪ বার, যেখানে ভারত জিতেছে ১০ ম্যাচে, পাকিস্তান মাত্র তিনটিতে। বাকি একটি ম্যাচ টাই হয়েছে। সর্বশেষ পাঁচটি দ্বন্দ্বেই জয় ভারতের। এবারও কি সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে, নাকি পাকিস্তান ফিরিয়ে আনবে নতুন ইতিহাস—সেই উত্তরের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

লিওনেল মেসি খেললে যেন জয় নিশ্চিত থাকে ইন্টার মিয়ামির জন্য। সেটাই আবারও প্রমাণ হলো ডিসি ইউনাইটেডের বিপক্ষে। জোড়া গোলের পাশাপাশি এক গোল করালেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। তাঁর নৈপুণ্যে ৩-২ গোলের জয়ে প্লে-অফের দৌড়ে আরও শক্ত অবস্থানে গেল মিয়ামি।

আজকের ম্যাচের ফলাফলে সরাসরি প্লে-অফ নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ ছিল ডেভিড বেকহ্যামের ক্লাবটির। তবে শর্ত ছিল—নিউ ইয়র্ক রেড বুলসকে মন্ট্রিয়েলের কাছে পয়েন্ট হারাতে হতো। কিন্তু রেড বুলস ২-০ ব্যবধানে জিতে যাওয়ায় মিয়ামিকে আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে সামনের ম্যাচেই সেই আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলার সম্ভাবনা আছে।

ফোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে বৃষ্টিভেজা ম্যাচে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় ইন্টার মিয়ামি। ৩৫ মিনিটে মেসির নিখুঁত থ্রু-পাস থেকে গোল করেন টাদেও আলেন্দে। তবে বিরতির পরেই (৫২ মিনিটে) ক্রিশ্চিয়ান বেন্টেকে হেডে সমতায় ফেরান ডিসি ইউনাইটেডকে।

এরপর মেসির জাদুতে মাঠ মাতলো। ৬৬ মিনিটে জর্দি আলবার পাস ধরে বক্সে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাঁ পায়ের শটে আবার এগিয়ে দেন মিয়ামিকে। এরপর ৭২ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি নিজে না নিয়ে সুযোগ দেন তরুণ সতীর্থ মাতেও সিলভেত্তিকে। তবে ১৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।

৮৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শটে ব্যবধান ৩-১ করেন মেসি। অতিরিক্ত সময়ে ডিসির জেকব মারেল গোল শোধ করলেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মিয়ামি।

এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ২২ ম্যাচে মেসির গোলসংখ্যা ২২। এর মধ্যে সপ্তমবারের মতো জোড়া গোল করলেন তিনি। আর এর সুবাদে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এককভাবে শীর্ষে উঠে গেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ন্যাশভিলের ইংলিশ ফরোয়ার্ড স্যাম সারিজের গোল ২১।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে অঘোষিত এক হাটবাজার। এখানে বিক্রি হচ্ছে ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ, আর সম্ভাব্য প্রার্থীরা মোটা অঙ্কের টাকায় সেই আসন কিনে নিচ্ছেন। কারণ, পরিচালক পদে জিততে হলে কাউন্সিলরদের ভোটই মূল হাতিয়ার।

কিছু ক্লাব এমন ব্যক্তিদের কাছেও কাউন্সিলরশিপ বিক্রি করছে, যাদের সঙ্গে ক্লাবের কোনো সম্পর্কই নেই। অনেক সময় ক্লাবের সভাপতি পর্যন্ত ক্রেতার নাম আগে শোনেননি। তবে টাকার অঙ্ক শুনে নড়তে হচ্ছে। কোথাও ২০ লাখ, কোথাও ৪০ লাখ, আবার কোথাও কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে এই লেনদেন। টাকা জমা হচ্ছে ক্লাবের এক–দুজন কর্তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে। নাম বদলে এটাকে অনেক ক্লাব কর্তাই ‘ডোনেশন’ বলে চালিয়ে দিতে চাইছেন।

কিন্তু বিস্ময়ের বিষয়, যেসব মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ক্লাবের কঠিন সময়ে পাশে ছিলেন, তাদের কাউকেই এই আসন দেওয়া হচ্ছে না। কারণ সহজ—এখন কাউন্সিলরশিপ বিক্রি করে ক্লাবগুলো কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছে। এমন লাভজনক ব্যবসা আর কই!

অন্যদিকে, যারা কোটি টাকা দিয়ে কাউন্সিলরশিপ কিনছেন, তাদের লক্ষ্যও স্পষ্ট। পরিচালক নির্বাচিত হলে এই বিনিয়োগ কয়েক গুণ মুনাফায় ফেরত আসবে। বিসিবির পরিচালক পদ এখন যেন মধু, আর সেই মধুর টানে চারপাশে ভিড় জমাচ্ছে ‘মৌমাছি’।

১৩০০ কোটি টাকার বাজেট যেই প্রতিষ্ঠানের হাতে, সেখানে অংশীদার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এমন অনেকেই, যাদের ক্রিকেট সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণাও নেই। কেউ কেউ তো ‘ক্রিকেট’ শব্দটিকেও উচ্চারণ করেন ‘কিরকেট’!

আজকের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, বিসিবির পরিচালক পদ এখন জাতীয় সংসদের এমপি হওয়ার মতোই মর্যাদার। অথচ রাজনীতিকে খেলাধুলা থেকে দূরে রাখার কথা যারা বলেন, সেই চেনা রাজনীতিবিদরাই এখন দল বেঁধে পরিচালকের আসনে বসতে চাইছেন।

কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এই রাজনীতিবিদ-পরিচালকরা ক্রিকেট উন্নয়নে কী করবেন? উত্তর খুঁজতে গেলে খুব দূরে যাওয়ার দরকার নেই। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছর পরও বাংলাদেশ এখনো এ ফরম্যাটে শুরুর স্তরে রয়ে গেছে।

একদিকে ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ কেনাবেচার খেলা, অন্যদিকে জেলা ও বিভাগীয় সংস্থাগুলোতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে চলছে প্রকাশ্য রাজনৈতিক প্রভাব। পরিচালক পদে যারা আসবেন, তাদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

এমন বাস্তবতায় বিসিবি নির্বাচনের মূল প্রশ্ন একটাই—বাংলাদেশ ক্রিকেট আসলে কতটা লাভবান হবে, আর কতটা ভোগাবে এই ভোটের রাজনীতি?

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের তারিখে পরিবর্তন এসেছে। আগে ৪ অক্টোবর ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও নতুন ঘোষণায় জানানো হয়েছে, নির্বাচন হবে ৬ অক্টোবর। সেদিনই সভাপতি ও সহসভাপতি পদে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

তফসিল অনুযায়ী আগামীকাল পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে কাউন্সিলরের মনোনয়ন। এরপর বিকেলে প্রকাশ করা হবে খসড়া ভোটার তালিকা। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হবে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে, আর দাখিলের শেষ তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর। সবকিছু যাচাই–বাছাই শেষে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ অক্টোবর।

নির্বাচনের দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। একই দিনে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে জানানো হবে সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচন। রাত ৯টার মধ্যে প্রকাশ করা হবে এই দুই পদে ভোটের ফলাফল।

ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২৬ যতই ঘনিয়ে আসছে, দর্শকদের আগ্রহও ততই বেড়ে যাচ্ছে। ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা জানিয়েছে, আসরের টিকিট কেনার প্রথম দফায় আবেদন করেছেন প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ।

টিকিটের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন এসেছে স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এ ছাড়া অপর দুই স্বাগতিক মেক্সিকো ও কানাডা থেকেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আবেদন পড়েছে। তবে দেশভিত্তিক বিস্তারিত সংখ্যা প্রকাশ করেনি ফিফা।

৯ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা প্রি-সেল পর্ব শেষে ফিফা জানিয়েছে, আবেদনকারীদের মধ্যে কারা টিকিট কেনার সুযোগ পাবেন, তা জানানো হবে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ইমেইলের মাধ্যমে। নির্বাচিতরা আগামী ১ অক্টোবর থেকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে টিকিট কিনতে পারবেন।

মোট ১০৪টি ম্যাচের টিকিট বিক্রি করা হবে। গ্রুপ পর্বের টিকিটের দাম শুরু হয়েছে মাত্র ৬০ ডলার থেকে। একজন দর্শক একটি ম্যাচের জন্য সর্বোচ্চ চারটি এবং পুরো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৪০টি টিকিট কিনতে পারবেন।

দ্বিতীয় ধাপের টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২৭ অক্টোবর। এ ছাড়া ২ অক্টোবর থেকে ফিফা একটি আনুষ্ঠানিক টিকিট পুনর্বিক্রয় প্ল্যাটফর্ম চালু করবে, যেখানে দর্শকেরা নিজেদের কেনা টিকিট পুনরায় বিক্রির সুযোগ পাবেন।