ঢাকা

এবার পাগলা মসজিদের দানবক্সে মিলল যত বস্তা টাকা ?

পাগলা মসজিদে দানকৃত টাকা পাগলা মসজিদে দানকৃত টাকা
-

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ১১টি সিন্দুক খোলা হয় এবং সেখান থেকে পাওয়া টাকা ভরে ফেলা হয় ২৮টি বস্তায়। দেশি টাকার পাশাপাশি পাওয়া গেছে স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রাও।

পরে সকাল ৯টায় মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে টাকা ঢেলে গণনার কাজ শুরু হয়। গণনা শেষ হলে সন্ধ্যায় মোট পরিমাণ প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত বছর ৩০ নভেম্বর সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন ২৯ বস্তা টাকা থেকে রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিন্দুক খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।

এবারের টাকা গণনার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন জেলা প্রশাসনের ২৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ২৪৭ জন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ১৪ জন সেনা সদস্য, ৩০ জন পুলিশ সদস্য, ১০ জন আনসার সদস্য এবং ৮০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

পাগলা মসজিদের সঙ্গে একটি জনশ্রুতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রয়েছে—এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়। তাই শুধু মুসলমান নয়, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এই মসজিদে দান করে থাকেন। দানের তালিকায় থাকে নগদ অর্থ, স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, বিদেশি মুদ্রা ছাড়াও গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, ফলমূল, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই।

জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানিয়েছেন, বর্তমানে পাগলা মসজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। এই অর্থের লভ্যাংশ দিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসা পরিচালনা, অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা এবং অন্যান্য ধর্মীয় ও সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।

প্রতিবারের মতো এবারও সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে দানবাক্সে পাওয়া চিঠিগুলো। এসব চিঠিতে কেউ লিখেছেন জীবনের প্রাপ্তি ও বেদনার কথা, কেউ করেছেন চাকরি বা পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য প্রার্থনা, আবার কেউ মনের মানুষকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।

গণনা শেষে দানের প্রকৃত পরিমাণ কত দাঁড়ায়, সেটাই এখন সবার নজর কাড়ছে।




কমেন্ট বক্স