জাতিসংঘে আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠির কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতো করে চিঠি লিখতে পারে, কিন্তু জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত কোনো দলের অনুরোধে প্রভাবিত হয় না।”
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “জাতিসংঘ একটি স্বাধীন সংস্থা। তাদের কাজ আন্তর্জাতিক প্রোটোকল ও চুক্তির ভিত্তিতে। কোনো দলের চিঠি বা অনুরোধে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয় না।”
এর আগে গত শনিবার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) ঢাকা কার্যালয়ে চিঠি পাঠায় আওয়ামী লীগ। দলের পক্ষ থেকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে যদি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত না হয়, তাহলে জাতিসংঘ ও ইউএনডিপিকে নির্বাচনী সহযোগিতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
চিঠিতে আরও দাবি করা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউএনডিপির ‘ব্যালট প্রজেক্ট’ ও অন্যান্য নির্বাচনী সহায়তা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও মানবাধিকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আওয়ামী লীগ মনে করে, এই ধরনের সম্পৃক্ততা জাতিসংঘের নিরপেক্ষ অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে জাতিসংঘের ভূমিকা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। তারা সরকারের আমন্ত্রণে ও সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করছে। কোনো দল তাদের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালনা করতে বদ্ধপরিকর। জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ইতিবাচক, এবং আমরা চাই তারা তাদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যাক।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের চিঠিটি রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করার একটি কৌশল হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর প্রভাব খুব সীমিত হবে, কারণ জাতিসংঘ সাধারণত সদস্য রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ছাড়া কোনো দলের চিঠির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয় না।